শারমীন বেগম হত্যাকাণ্ড যেন সব পৈশাচিকতাকে হার মানিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত ঘর শারমীনের পোড়া মরদেহ (কয়লা) উদ্ধার করে। তার দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করা মাথাটি উদ্ধার করা হয় পাশের একটি পুকুরের কাছে জমি থেকে। মাথাটিও গর্তে পুঁতে রাখা হয়েছিল।
অথচ ঘাতক ফারহান রনিকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছেন এই শারমীন বেগমই। জানা গেছে, রনির স্বজনের জায়গাতেই থাকতেন শারমীন ও তার স্বামী-সন্তানরা। পারিবারিকভাবে তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক। এ অবস্থায় শারমীনকে এভাবে পৈচাশিকভাবে হত্যার বিষয়টি হতবাক করে দিয়েছে সবাইকে।
জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার শারমীন বেগম উপজেলার হীরাপুর গ্রামের কলোনি এলাকার মো. নুরুল ইসলাম বেপারীর স্ত্রী। ঘটনার দিন ভোরে ওই নারীকে ডেকে নিজবাড়িতে নিয়ে যান ঘাতক ওই যুবক। এরপর হত্যার পর পুড়ে ফেলেন তার মরদেহ।
এদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ড নিয়ে অসংলগ্ন কথা বলছেন রনি। তার দাবি, শারমীন বেগম তাকে তাবিজ করেছেন। শারমীন বেগমের এক মেয়েকে তিনি বিয়ে করতে চেয়েছিলেন, এসব কারণে তিনি এটা করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ফারহানের বাবা যুবলীগ নেতা শাহনেওয়াজ ভূইয়া বাড়ির বাইরে অবস্থান করছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে জ্বলতে থাকা আগুনের কাছাকাছি ঘুরঘুর করছিলেন রনি। এতে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। এ নিয়ে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হলে হত্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন তিনি। একই সঙ্গে মারতে তেড়ে আসেন। পরে স্থানীয়রা দলবদ্ধ হয়ে ওই যুবককে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এরই মধ্যে পাওয়া যায় পোড়া মানবদেহ। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক হত্যার কাহিনী। উদ্ধার করা হয় দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করা মাথা।
আখাউড়া থানার ওসি মে. ছমিউদ্দিন জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘাতক ফারহান একেক সময় একেক কথা বলছেন। তাকে আদালতে তোলা হবে।